সীতাকুণ্ডে ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর সম্মুখ যুদ্ধের ইতিহাস

Passenger Voice    |    ১২:০৯ পিএম, ২০২৩-১২-১৬


সীতাকুণ্ডে ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর সম্মুখ যুদ্ধের  ইতিহাস

মোঃ জয়নাল আবেদীন,সীতাকুণ্ড: বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার মতো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বীরত্ব গাঁথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে।দেশ ও  মানুষের জানমাল রক্ষায়  মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে স্বাধীনতা যুদ্ধে অকুতোভয় বীর হিসেবে লড়াই করে গেছেন।মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণীয় করে রাখতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণীয় করে রাখতে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।প্রতিটি ভাস্কর্য নির্মাণের পিছনে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিবিজড়িত ঘটনাবলি।তেমনি শিল্পাঞ্চল খ্যাত চট্টগ্রামে ইতিহাস বিজড়িত মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনা নিয়ে অনেকগুলো ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।মুক্তিযুদ্ধের ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে আছে সম্মুখ যুদ্ধের ইতিহাস হিসেবে পরিচিত মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র ভাস্কর্য। দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা যখন এখানে ঘুরতে আসেন তখন মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র ভাস্কর্য দেখে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তাকিয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে এবং মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।ভাস্কর্যে দুজন মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং তাদের পিছনে মানচিত্রের উপর লাল সবুজের পতাকা অংকন করা হয়েছে।ছবিতে থাকা একজন বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা অপরজন হলেন ভারতীয়।আর ভাস্কর্যের সামনে ফলকে লেখা রয়েছে সীতাকুণ্ডে সম্মুখ যুদ্ধের ইতিহাস।

মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র ভাস্কর্য কেন নির্মান করা হয়েছে?
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিকে ১২ ডিসেম্বর থেকে বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত বাহিনীর তুমুল সম্মুখ যুদ্ধ চলতে থাকে।যুদ্ধ করতে করতে ১৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় পৌঁছান।এতে পিছু হটে পাকিস্তানি বাহিনী।ওইদিন বিকেলে বিজয়ের ঘোষণা আসলে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় উল্লাস শুরু করেন।বিজয় উল্লাস শেষে কেউ কেউ বাড়িতে ফিরে যান।এমন মূহুর্তে অপ্রস্তুত অবস্থায় থাকা ভারতীয় সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় পাকিস্তানিরা।এতে সীতাকুণ্ডে আবার যুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধ থামে ১৭ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত।এই সম্মুখ যুদ্ধে অর্ধশতাধিক ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সৈনিকেরা ও বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। সীতাকুণ্ড ১৭ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয়।এসব ভারতীয় মুক্তিবাহিনীর মৃতদেহ সৎকার করা হয় পৌরসদরের চন্দ্রনাথ মহাতীর্থের গজারিয়া দীঘির পাড়ে।সেই স্মৃতি রক্ষার্থে হনুমান মন্দিরের পাশে ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাস্কর্য নির্মাণ করেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ।

দেশ বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা এবং ভারতীয় নাগরিকদের গর্বিত করে তুলে এই বীরত্ব গাঁথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিজড়িত ভাস্কর্য।চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আসলে এটি দেখতে ইতিহাস আগ্রহী ও দেশপ্রেমিক নাগরিকরা ভক্তি ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে।


প্যা/ভ/ম